শরিফুল ইসলাম, নড়াইল: মাদক সেবনে বাঁধা দেওয়ায় নড়াইলে কাজী সুমাইয়া ইসলাম (২২) নামে এক নারীকে লোহার রড দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেছে স্বামী।
গত বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকালে সদর উপজেলার পইলডাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
শারিরীক যন্ত্রণায় নড়াইল সদর হাসপাতালের বিছানায় চারদিন ধরে কাতরাচ্ছেন নির্যাতিতা ওই গৃহবধূ।
এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর বাবা নজরুল ইসলাম বাদশা বাদী হয়ে গৃহবধূর স্বামী আশিক ও তার বাবা-মা ও বোনসহ চারজনকে আসামী করে নড়াইল সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
স্বামী আশিক নড়াইলে নির্মাণাধীন রেলওয়ে প্রকল্পে চীনাদের সঙ্গে দোভাষী হিসেবে কাজ করেন।
ওই গৃহবধূর পরিবার জানিয়েছে, ১১ মাস আগে নড়াইল সদরের পইলডাঙ্গা গ্রামের মনসুর খানের ছেলে আশিক খানের সঙ্গে লোহাগড়া উপজেলার শামুকখোলা গ্রামের নজরুল ইসলাম বাদশার মেয়ে কাজী সুমাইয়া ইসলামের বিয়ে হয়। বিয়ের পর সুমাইয়া জানতে পারেন তার স্বামী মাদকাসক্ত। সংসারে সুখের কথা বিবেচনায় স্বামীর মাদকাসক্তের বিষয়টি গোপন রাখলেও পরে তা জানাজানি হয়ে যায়। স্বামীকে মাদক থেকে দূরে রাখার জন্য অনেক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন সুমাইয়া। এ কারণে প্রায়ই সুমাইয়াকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে হয়। এরই জের ধরে ঘটনার দিন বিকালে আশিক তার স্ত্রীকে বেদম মারধর করে পালিয়ে যায়।
গৃহবধূ সুমাইয়া বাবা অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য নজরুল ইসলাম বাদশা বলেন, ‘বিয়ের দুই মাস পর থেকেই আমার মেয়ের ওপর নির্যাতন শুরু হয়েছে। জামাই আশিক প্রায়ই সুমাইয়াকে মারধর করে। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার পারিবারিকভাবে শালিস হয়েছে। তবে আশিকের নির্যাতন বন্ধ হয়নি। সর্বশেষ ১৫ সেপ্টেম্বর আমার মেয়েকে রড দিয়ে বেদম মারধর করে আশিক। এতে তার তিনটি দাঁত ভেঙ্গে গেছে। ঠোঁটে ১০টি সেলাই দিতে হয়েছে। মাথা, পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত রয়েছে। আমার মেয়েটি ঠিকমত কথা বলতে পারছে না। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’
নড়াইল সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার পার্থ সারথি রায় জানান, সুমাইয়ার মাথা, ঠোঁটসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহৃ রয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তার সিটি স্ক্যানসহ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা দেয়া হয়েছে।
নড়াইল সদর থানার ওসি (চলতি দায়িত্ব) মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘ভূক্তভোগী গৃহবধূর বাবা বাদী হয়ে চারজনের নামে শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাতে মামলা করেছেন। তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া।’